কাফনের কাপড় দিয়ে স্কুল ড্রেস বানিয়ে পড়া ছেলেটি বিদ্যালয়ের পূর্বের সকল রেকর্ড ভেংঙ্গে সবোর্চ্চ নম্বর, সর্বোচ্চ লেটার নিয়ে মেট্রিক পাস!!!
বিচিত্র
এ জগতে নানান রঙ্গের, নানান রূপের মানুষ দেখা যায়।আবার ধর্ম, বর্ণ, গোত্র কিংবা লিঙ্গ ভেদে্ও নানান ধরনের মানুষের উপস্থিতি।আর্থিক সক্ষমতার উপর ভিত্তি করেও মানুষ বিভিন্ন ধরনের হয়।কেউ উচ্চ বিত্তের, কেউ মধ্য বিত্তের, কেউ নিম্ন বিত্তের আবার কেউবা অতি নিম্ন বিত্তের বা অতি দরিদ্রের।আমাদের
সমাজে কেউ জন্ম গ্রহন করে সোনার চামচ মুখে নিয়ে কেউবা আবার জন্ম গ্রহন করে, অতি নিম্ন বিত্তে যেখানে সোনার চামচ তো দূরের কথা,
সেখানে জন্মের পরে মুখে ঠিক মত পানি্ও জোটে
না।
কেউবা
জন্ম গ্রহন করে ১০তলা বিল্ডিংয়ে এসির ভিতরে আবার কেউবা জন্ম গ্রহন করে, গোয়াল ঘরে। তবে জন্ম যা-ই হোক,
কর্ম টা হলো আসল।অর্থাৎ
জন্ম হোক যথাতথা কর্ম হোক ভাল। বিল গেটসের এক কথা এ
প্রসংগে উল্লেখ করা যায়, তাঁর মতে, তুমি যদি গরিব হয়ে জন্ম গ্রহণ করো, এটি তোমার ব্যর্থতা নয় বরং এটি
তোমার বাবার ব্যর্থতা কিন্তু তুমি যদি গরিব হয়ে মৃত্যু বরণ করো, এটি তোমার ব্যর্থতা।
আমি মোহাম্মদ তাহের আলী, সহকারী অধ্যাপক অর্থনীতি বিভাগ, সরকারী নাজিমউদ্দিন কলেজ, মাদারীপুর। আমি ২৮তম বিসিএস(শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা)।এর আগে আমি সোনালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসা ছিলাম, তার আগে আমি স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেড এর প্রবেশনারী অফিসার ছিলাম।তার আগে আমি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিকেবে নির্বাচিত
হয়েছিলাম কিন্তু আমি যোগদান করিনি।অবশ্য আমি ২৭তম বিসিএস ক্যাডারেও প্রথম বার নির্বাচিত হয়েছিলাম।
মানুষের দিন সব সময় এক
রকম যায় না।কেউ যেমন রাজ পুত্র থেকে ভিখারীতে পরিনত হতে পারে, আবার কেউ কর্মগুণে
কুঁড়ে ঘরে জন্ম নিয়ে কিন্তু সফলতার উচ্চ সিংহাসনে বসতে পারে।পৃথিবীতে এরকম কিন্তু
অনেক নজির রয়েছে।আমরা প্রায় সকলেই জানি, আমেরিকার সর্বকালের সেরা প্রেসিডেন্ট
আব্রাহাম লিংকন কিন্তু এক সময় মুচির কাজ করেছেন।তিনি নৌকার মাঝিও ছিলেন
একসময়।সেখান থেকে তিনি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হয়েছেন।ভারতের মিসাইল ম্যান, পারমানবিক
বোমার জনক এপিজে আবুল কালাম আজাদ কিন্তু এক সময় খবরের কাগজ বিক্রি করতেন।সেখান
থেকে তিনি কিন্তু ভারতের প্রেসিডেন্ট হয়েছন।
আরও পড়তে পারেন:
- চতুর্থ শ্রেণীতে ধর্মে ফেল কিন্তু দশম শ্রেণীতে প্রথম!!!
- ৫ম শ্রেনীর বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণে অযোগ্য ছেলেটি ৮ম শ্রেনীর জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষায় বিদ্যালয়ের পূর্বের সকল রেকর্ড ভেঙ্গে বৃত্তি পায়!!!
- করোনাকালীন সময়ে জরুরী কিছু স্বাস্থ্য টিপস
যাই হোক, আমি তেমন কেই
নই।তারপরও আমি মনে করি, এটিই একে বারে কম কিছু নয়।আসলে আমাদের পারিবারিক অবস্থা
এতটাই খারাপ ছিল যে, বাবা আমাদের তিন বেলা খাবার জোগাড় করতে পারতেন না।আমরা ঠিকমত
বিদ্যালয়ের বেতন দিতে পারতাম না।টাকার অভাবে বাবা, সর্বদা কম দামের জিনিস কিনে
আনতেন।তো যখন ৬ষ্ট শ্রেণীতে উঠি, তখন আমাদের স্কুলের শার্টের কালার ছিল সাদা।বাবা
সবচেয়ে কম দামের সাদা কাপড় কিনতে গিয়ে এমন একটি কাপড়ে এনেছিলেন যে, সেটি দিয়ে শার্ট বানানোর পরে
জানতে পারি, সেটি কাফনের কাপড় ছিল।তো এটার জন্য অনেক কান্নাকাটি করেছিলাম।
শুধু তা-ই নয়, স্কুলের
প্যান্টের রং ছি নেভি ব্লু।আমরা আমাদের খালাতো ভাইদের দেয়া পুরাতন জিন্সের প্যান্ট পড়ে ক্লাশ
করতাম।সেটির রং নীল ছিল বলে, সেটাকেই নেভি ব্লু হিসেবে চালাতাম।কোন দিন দুপুরে
টিফিন করতে পারিনি।আমরা প্রতি শুক্রবার ছুটির দিনে দিন মজুরি খাটতাম।টাকার অভাবে
কখনো নতুন বই কিনতে পারতাম না।সব সময় পুরাতন বই পড়তাম।অনেক সময় বন্ধুদের বই কিংবা
নোট ধার করে পড়তে হয়েছে।কোন দিনের জন্যও প্রাইভেট পড়তে পারিনি।এসএসসি পরীক্ষার ফরম
ফিলাপের জন্য ১৪৫০ টাকা ফি নির্ধারিত ছিল কিন্তু তা দিতে পারিনি।
আমার শিক্ষা গুরু আমার
কাকা, খন্দকার রাশেদুজ্জামান রাজা কাকা, স্কুলের প্রধান শিক্ষক জনাব রায়হান উদ্দিন
আহমেদ স্যারের সাথে কথা বলে স্কুলের ১০০০টাকা মাফ করান এবং বোর্ডের ৪৫০টাকা কাকা
নিজের পকেট থেকে দিয়ে দেন।কাকার এই ঋণ আমি কোন দিনও শোধ করতে পারবো না।আমি কাকার
কাছে চির ঋণী।প্রায় ৭.৫ কিমি. পায়ে হেঁটে গিয়ে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েও ৫টি লেটার সহ মানবিক
বিভাগ থেকে ৭৯৫ নম্বর পেয়েছি, যা আমাদের বিদ্যালয়ের একটি অনন্য রেকর্ড যা এখন পর্যন্ত
কেউ ভাঙ্গতে পারেনি।
এরকম অনেক ঘটনা আছে, যা পড়লে আপনাদের গায়ের লোম খাড়া হয়ে যাবে এবং আপনাদের চোখ দিয়ে পানি চলে আসবে।এরকম শ’খানেক ঘটনা ধারাবাহিক ভাবে, আমার ইউটিউব চ্যানেল JIbon Theke Neya তে তোলে ধরবো।আপনাদেরকে বিনীত ভাবে অনুরোধ করছি, আমার এই চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করার জন্য।এখানে এমন কিছু বিষয় জানতে পারবেন যা আপনি জীবনে ্ও শুনেনেনি।যাই হোক বাকী ঘটনা আপনারা নিচের ভিডিও হতে জানতে পারবেন।ধন্যবাদ,
মনোযোগ দিয়ে লেখাটি পড়ার জন্যে।
No comments